গর্ভাবস্থায় কি কি খাবার খেতে হয় এবং খাবারের উপকারিতা
গর্ভকালীন সময়ে আপনার নিয়মিত খাবার তালিকায় সুষম,প্রোটিন , স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি একটি গর্ভকালের বাড়তি সমস্ত প্রকার পুষ্টির চাহিদা নিশ্চিত করে আপনার ও গর্ভের শিশুর সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । আপনার গর্ভের শিশুর উপযুক্ত গঠন ও শারীরিক বিকাশ নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকার স্বাস্থ্য জটিলতা প্রতিরোধে একটি সুষম খাবার তালিকা মেনে চলা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
- মাছ
- ডিম
- ফল
- শাকসবজি
- ফলিক এসিড ও আয়রন
- ওমেগা -৩ যুক্ত খাবার
- এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার
- ভিটামিন যুক্ত খাবার
- কপার ও জিংক যুক্ত খাবার
- আয়োডিনসমৃদ্ধ খাবার
স্যামন, টুনা, ম্যাকারেল মাছ এ অনেক বেশি ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ। এই পুষ্টি সমৃদ্ধ উপাদান গুলো শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য খুবই জরুরি। বিজ্ঞানীদের গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব মায়েরা গর্ভাবস্থায় সপ্তাহে একাদিক বার মাছ খায়। তাদের সন্তানেরা অনেক বেশি বুদ্ধিমত্তা বা আইকিউ বিশিষ্ট হয়।
ডিম
ডিম এ অনেক বেশি অ্যামিনো এসিড কোলিন সমৃদ্ধ। ডিম শিশুর মস্তিষ্কের গঠন ভালো হয় এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে অনেক বেশি কাজ করে । গর্ভবতী নারীদের দিনে কমপক্ষে দুটো করে ডিম খাওয়া উচিত যার থেকে অনেক বেশি কোলিন মেলে। ডিমে থাকা প্রোটিন ও আয়রন প্রতিটি শিশুর জন্মের সময় ওজন বাড়াতে অনেক বেশি কাজ করে ।
ফল
ফল এ অনেক বেশি পুষ্টি উপাদান থাকে। একটি শিশুর সুস্থ শারীরিক বিকাশের জন্য যে পুষ্টি উপাদান গুলো দরকার তার বেশির ভাগ এ পাওয়া যায় ফলমূল থেকে। তাই ফলের ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ন।
ফলিক এসিড ও আয়রন
কলা, শুকনো ফল, পুদিনাপাতা তে আছে আয়রন ও ফলিক অ্যাসিড , যা গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্ক বিকাশে, বুদ্ধিমত্তা বাড়াতে অনেক বেশি কাজ করে। গর্ভধারণের আগে থেকেই ফলিক অ্যাসিড এর কার্যকারিতা অনাগত সন্তানের জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধে অনেক বেশি সাহায্য করে।
শাকসবজি
পালং শাকে ,পাই শাক, লাল শাক , ও কচু শাকে ইত্যাদি ফলিক এসিড সরবরাহ করে। এ ছাড়াও ফলিক এসিড সাপ্লিমেন্ট ভিটামিন বি-১২- এর সাথে খেলে তা অনেক বেশি উপকারী ।
ওমেগা -৩ যুক্ত খাবার
গর্ভধারণের তৃতিয় মাস থেকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত খাবার বেশি খেতে হবে। কুমড়ার বিচি , সামুদ্রিক মাছ যেমন স্যালমন, টুনা, ও কড লিভার ওয়েলে ম্যাকেরেল প্রচুর ওমেগা-৩ থাকে যা শিশুর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ । সামুদ্রিক মাছে DHA থাকে যা পরবর্তী সময়ে শিশুর বুদ্ধিমত্তার বিকাশ ঘটাতে অনেক বেশি সাহায্য করে।
সন্তানের স্নায়ুকোষ গঠনের জন্য আপনার শরীরের অনেক বেশি পুষ্টির দরকার হয় । এ জন্য শরীরের বাড়তি কিছু প্রোটিন ও ভিটামিন লাগবে। আপনাকে প্রোটিনযুক্ত ও পুষ্টি জাতীয় খাবার বেশি করে খেতে হবে। যেমন: দই ও দুধ । দইয়ে ক্যালসিয়াম আছে যা গর্ভাবস্থায় অনেক বেশি প্রয়োজন হয়।
এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার
সবুজ শাকসবজি বিশেষ করে পালংশাক, বাঁধাকপি, ব্রকলি, পুঁইশাক , কলমি শাক ,টমেটো, বিনস প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় রাখতে হবে। এগুলোয় লুটেইন নামের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট অনেক বেশি থাকে, যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে অনেক বেশি সাহায্য করে। বাদাম, কিসমিস ,কাজুবাদাম , কালোজামও খেতে পারেন গর্ভাবস্থায়। এগুলোয় বিদ্যমান ভিটামিন ই এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট,ফলিক এসিড শিশুর স্মৃতিশক্তি বাড়াতে অনেক বেশি কাজ করে ।
কপার ও জিংক যুক্ত খাবার
খাদ্যতালিকায় কপার ও জিংক সমৃদ্ধ খাবার যেমন কাজুবাদাম, কোলা ,, মটরশুঁটি, বিট ও জিঙ্কসমৃদ্ধ খাবার যেমন শস্যজাতীয় খাবার, ছোলা, গরুর মাংস পরিমাণমতো রাখতে হবে। যার ফলে গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের কোষ সঠিকভাবে বিকাশ পায় ।
আয়োডিনসমৃদ্ধ খাবার
সন্তানের বুদ্ধিমত্তাও মানসিক বিকাশে আয়োডিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ । এ জন্য প্রতিদিন খাবারের তালিকায় আয়োডিনযুক্ত লবণ নিতে হবে। আমরা আয়োডিনের জন্য সামুদ্রিক মাছ, ডিম, কলিজা,কচু শাক , ভুট্টা খেতে পারি ।
0 Comments